সরকার কেন ভাঙতে পারছে না বাজার সিন্ডিকেট, গলদ কোথায় ?

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে। দামের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আগে একটা-দুইটা পণ্যের দাম বাড়লেও অন্যপণ্যের দাম কমছিলো। এবার একসঙ্গে বেড়েছে বেড়েছে ১২ পণ্যের দাম। বলা হচ্ছে সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্ত সিন্ডিকেট ভাঙা যাচ্ছে না কেন এ প্রশ্ন সবার। বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্নে রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে, সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক সপ্তাহে, অর্থাৎ ৭ থেকে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে ১২টি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এ তালিকায় রয়েছে সয়াবিন তেল, পাম তেল, চালের কুঁড়ার তেল বা রাইস ব্র্যান অয়েল, আলু, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন, জিরা, দারুচিনি, ধনে, গরুর মাংস ও ডিম। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে ডিমের দাম বেড়েছে জানিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) আলীম আখতার খান বলেছেন, ডিমের বাজারে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। ১৫ অক্টোবর ভোক্তার ডিজি আরও বলেন, উৎপাদন পর্যায়ে থেকে পাইকারি পর্যায় পর্যন্ত সরাসরি ডিম সরবরাহ করা হবে। ডিমের সরকারি খুচরা মূল্য ১১.৮৭ টাকা নির্ধারণকে সঠিক বলেছেন করপোরেট কোম্পানি ও ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম। খুচরা বাজারে প্রতি হালি ডিম পাওয়া যাওয়ার কথা ৪৮ টাকায়। কিন্তু এই দামে ডিম পাচ্ছেন না ক্রেতারা। জানা গেছে, চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিমের আড়তগুলোতে মধ্যে অধিকাংশ আড়ত বন্ধ। হাতে গোনা দুই একটি আড়ত খুললেও ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে এই ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদার গণমাধ্যমকে বলেছেন, বেশি দামে কেনা ডিম সরকার নির্ধারিত দরে কীভাবে বিক্রি করব। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাজারে ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে এটা ঠিক। এ ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের কথা বলে পার পাওয়া যাবে না। তবে বাজারে পণ্যের সরবরাহ যাতে বাড়ে ও দাম কমে আসে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষ কষ্টে আছে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ১৬ অক্টোবর রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ঢিলেঢালাভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এভাবে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকারকে সঠিক একটি রূপরেখা তৈরি করতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকার বিদায়ের পর জনমতের সরকার এসেছে; কিন্তু তার পরও তাদের শক্তিশালী ভূমিকা নজরে আসছে না। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম ইতিহাস গড়েছে। মনে হয় দেশে দুর্ভিক্ষ লেগেছে। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে অসুবিধা কোথায়, সিন্ডিকেটে কারা জড়িত? ১৪ অক্টোবর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ইউনুছ আহমাদ বলেন, কেন বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না, জিনিসপত্রের দাম কমছে না। জাতি জানতে চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, কারওয়ান বাজারে ডিম ট্রাকে থাকা অবস্থাতেই চারবার হাতবদল হয়। এখন পর্যন্ত এই সরকার কোনো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। শুধু সিন্ডিকেটের সাইনবোর্ড পরিবর্তন হয়েছে। সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে এই অভ্যুত্থানের প্রাথমিক মাহাত্ম্য কী?। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেছেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের দোসর লুটেরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তারাই এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে কোনও কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অবিলম্বে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।’ পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির জন্য নয়; নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বিগত সরকারের আমলের ন্যায় বর্তমানেও বহাল তবিয়তে থাকা সিন্ডিকেটের কারণে। এই সিন্ডিকেট নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম মনগড়া বৃদ্ধি করছে। এতে বিপাকে পড়ছেন ভোক্তারা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির খান বলেছেন, ঢাকায় নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিআরটিএ মিটিং ছিল। সেখানে আমরা বলেছি, এখন পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি হচ্ছে না। পুলিশ, শ্রমিক নেতা কিংবা দলীয় কোন পারপাসে চাঁদাবাজি নেই। ট্রাক ভাড়াও আগের চেয়ে কমেছে। তারপরও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন? এটা আসলে সিন্ডিকেটের কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত সরকারের আমলে বড় বড় যে সকল সিন্ডিকেট ছিল, তারা এখনো রয়েছে। আর তাদের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণেই নিত্যপণ্যের দাম দিনকে দিন বাড়ছে। উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, সিন্ডিকেট শনাক্ত এবং ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। যদি সিন্ডিকেটের বিষয়ে কোনো তথ্য থাকে, কারা দাম বাড়াচ্ছে এবং একচেটিয়া ব্যবসা করছে তা আমাদের জানান। সরকার অবশ্যই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেছেন, বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে ছাত্র-জনতাকে আবারো সক্রিয় হতে হবে। সরকার পতনের পর ছাত্ররা যেভাবে বাজার তদারকি করেছিল, সেটি আবারো নিয়মিত করা যেতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে। তিনি বলেন, সিন্ডিকেটকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। এখনই সময় বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যবসায়ীরা বরাবরই সুযোগসন্ধানী। সিন্ডিকেট শুধু খোলস আর কৌশল পাল্টেছে, স্বভাব বদলায়নি। সিন্ডিকেটে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। বাজারে স্বস্তি ফেরাতে এখনই সময় সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার।
সর্বকালের সকল রেকর্ড ভাঙল স্বর্ণের দাম

বিশ্বজুড়ে বেড়েই চলেছে বহুমূল্যবান ধাতু স্বর্ণের দাম।এবার আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে স্বর্ণের দামের সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। দুবাই জুয়েলারি গ্রুপের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার বাজার খোলার সময় ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম গ্রামপ্রতি ৩২৪ দশমিক ২৫ দিরহামে উঠেছে, যা গতকাল বুধবার বাজার বন্ধের সময় ছিল ৩২৩ দশমিক ৭৫ দিরহাম। এছাড়াও ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম গ্রামপ্রতি ৩০০ দশমিক ২৫ দিরহামে খোলার সময় শূন্য দশমিক ৫০ দিরহাম বেড়ে যায়। একইভাবে ২২ ক্যারেট ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের দাম গ্রামপ্রতি বেড়ে যথাক্রমে ২৯০ দশমিক ৭৫ ও ২৪৯ দশমিক ২৫ দিরহাম হয়ে যায়। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ছিল প্রতি আউন্স ২ হাজার ৬৭৮ দশমিক ৫৮ ডলার, যা সকাল ৯টা ১০মিনিটে (সংযুক্ত আরব আমিরাতের সময়) শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন অর্থনীতির অনিশ্চিত পরিস্থিতি স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে তুলছে।
নিউজিল্যান্ডের কাছে নিজের মাঠে ৪৬ রানে অলআউট ভারত

বাংলাদেশকে টেস্ট সিরিজে উড়িয়ে দিয়ে দারুণ ছন্দে থেকেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল ভারত। কিন্তু কিউই পেসারদের সামনে একদমই মুখ থুবড়ে পড়েছে স্বাগতিক ব্যাটিং লাইন-আপ। টেস্ট ইতিহাসে নিজেদের তৃতীয় সর্বনি¤œ দলীয় সংগ্রহে ভারত অলআউট হয়েছে ৪৬ রানে। বেঙ্গালুরুতে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন মেঘলাচ্ছন্ন আকাশের নিচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ঘরের মাঠে সর্বনি¤œ দলীয় সংগ্রহে গুটিয়ে গেছে রোহিত শর্মার দল। ইনিংসের স্থায়ীত্ব ছিল ৩১ ওভার ২ বল। এর আগে ১৯৮৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দিল্লি টেস্টে ৭৫ রানে অলআউট হয়েছিল দলটি। নিউ জিল্যান্ড পেসারদের তোপে স্বাগতিকদের পাঁচ ব্যাটার ফেরেন কোনো রান না করেই। ১৩ ওভার ২ বলে ১৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন ম্যাট হেনরি। উইলিয়াম ওরোর্ক নেন ৪ উইকেট। টিম সাউদির শিকার একটি। ব্যাটিংয়ে নামার পর থেকেই সাউদি-হেনরিদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন দুই ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল ও রোহিত। সপ্তম ওভারে দারুণ এক ইনসুইং ডেলিভারিতে ভারত অধিনায়ককে বোল্ড করে ৯ রানের এই জুটি ভাঙেন টিম সাউদি। এদিন আট বছর পর তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ৯ বলের বেশি ক্রিজে টিকতে পারেননি। কোনো রান করেই ফেরেন ওরোর্কের বলে। এরপর বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন রিশাভ পান্ত। বাঁহাতি এই ব্যাটার ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন দলীয় ৩৯ রানে। এরপর দ্রুতই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কোহলি ছাড়াও শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন সরফারাজ খান, লোকেশ রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্টে ভারতের সর্বনি¤œ দলীয় সংগ্রহ ৩৬ রান। ২০২০ সালে অ্যাডিলেইডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২১ ওভার ২ বলে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা। দ্বিতীয় সর্বনিন্ম সংগ্রহটি আসে ১৯৭৪ সালে লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেবার ৪২ রানে অলআউট হয় ভারত। ইনিংসের স্থায়ীত্ব ছিল ১৭ ওভার।
বিদায়ী টেস্ট খেলা হচ্ছে না দেশের মাটিতে, দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন সাকিব

বিশ্বখ্যাত অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান মিরপুরে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন যে আপাতত বাস্তবে রূপ নিচ্ছে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত। কারণ দেশেই ফিরতে পারেননি সাকিব। সবশেষ খবর, দুবাই পর্যন্ত এসে দেশের ফ্লাইট ধরার অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু গ্রিন সিগন্যাল না পেয়ে তিনি ফিরে যাচ্ছেন। তবে, সাকিব স্ত্রী-সন্তানের কাছে নিউইয়র্কে ফিরবেন, নাকি অন্য কোথাও, তা আপাতত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে সাকিব দেশে আসছেন না, এমন তথ্য জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে গেলো কয়েকদিন কম নাটক হয়নি। তিনি দেশে শেষ টেস্ট খেলার আগ্রহ প্রকাশের পর থেকে নানা মহলে নানা প্রতিক্রিয়া আসে। ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রথম কথায় মনে হয়েছিল, সাকিবের দেশে আসা হচ্ছে না। তার কথার কপি-পেস্ট শোনা গিয়েছিল বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কণ্ঠেও। পরবর্তীতে যদিও দু’জনের সুরই কিছুটা নরম হয়। সাকিবকে নিরাপত্তা দেয়ার কথা জানান তারা। সবশেষ বিপিএলে চিটাগং কিংসে নাম লেখালে তার দেশে আসার পথ আরও পরিষ্কার বলে মনে করেছিল অনেকেই।
বিরল ঘটনা, বাংলাদেশে এক বছরে ৯টি আন্তর্জাতিক টেনিস টুর্নামেন্ট আয়োজন হলো

গত ১৪ বছর এডহক কমিটিতে আটকে ছিলো বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন। সাধারণ সম্পাদকের পদকে কেন্দ্র করে টেনিস ফেডারেশনে নির্বাচন হয়নি দীর্ঘ সময়ে। স্থবির হয়ে পড়েছিলো বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় এই খেলাটির কার্যক্রম। ২০২২ সালের ২৬ জুন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক পায় বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন। নতুন কমিটি দায়িত্ব নিয়ে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে ফেডারেশনে। পাল্টে দিয়েছে পুরো ফেডারেশনের চেহারা। ঝিমিয়ে পড়া টেনিসের গতির সঞ্চার হয়েছে। এক বিরূপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ২০২২ সালের ১ জুলাই দায়িত্বভার গ্রহণ করে টেনিস ফেডারেশনের নির্বাচিত কমিটি। ৩২ লাখ টাকা বিল বকেয়া থাকায় ফেডারেশনের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিলো বিচ্ছিন্ন। অন্ধকার ঘরে হাতপাখার বাতাস দিয়ে চালানো হয় নির্বাচিত কমিটির প্রথম সভার কার্যক্রম। বিদ্যুতের মতো পানির বিল বকেয়া ছিলো অড়াই লাখ টাকার উপরে। জরাজীর্ণ চেহারা ছিলো টেনিসের। বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকার ঘরের মতোই ছিলো সামগ্রিক টেনিসের চিত্র। শুধু এখানেই শেষ নয়, টেনিস আঙিনায় বসতো সাবেক খেলোয়াড় ও কোচদের মাদকের আড্ডা। এমনকি ফেডারেশনের ছাদে বসেও মাদক সেবন করতো তারা। আর ফেডারেশন কর্তার নারী কেলেঙ্কারী তো রয়েছেই। যে কারণে ২০১৮ সালে সাবেক সাধারণ সম্পাদককে বহিস্কার করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। টেনিস ফেডারেশনকে শতভাগ দুর্নীতি আর মাদকমুক্ত করতে গিয়ে অনেকের রোষানলে পরতে হয় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মোহাম্মদ হায়দারকে। শুধু তাই নয়, সাবেক টেনিস খেলোয়াড় অমল রায় ফেডারেশনের আঙিনায় নিয়মিত মাদক সেবন করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় অমল রায় মাদকাশক্ত অবস্থায় টেনিস ফেডারেশনের সহকারী প্রশাসনিক কমকর্তা সবুজ উদ্দিন ইকবালের শয়ন কক্ষ রড দিয়ে ভেঙে তাকে হত্যার চেষ্টা করে। ফেডারেশনের সভাপতি নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে ঘটনাটি জানানোর পরেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। এই অমল রায়ের সঙ্গে খালিদ মাহমুদ প্রতি সন্ধ্যায় শারীরিক ফিটনেসের জন্য টেনিস খেলতেন। এক কথায় টেনিস ফেডারেশনের আশপাশের অবস্থা ছিলো খুবই নাজুক। অবকাঠোমো অবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিলো। আবু সাঈদ মোহাম্মদ হায়দার ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েই পুরো অবকাঠামো পাল্টে দেয়ার শপথ নেন। ঢেলে সাজান সবকিছু। তার চেষ্টা আর আন্তরিকতায় পাল্টে যায় ফেডারেশনের চিত্র। চারদিকে ঝলমলে পরিবেশ। আধুনিকতার ছোঁয়া। ৫২ বছরের মধ্যে প্রথমবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভিআইপি গ্যালারি পেয়েছে টেনিস ফেডারেশন। খেলোয়াড়দের ৭৬টি আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবগুলোই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ছেলে ও মেয়ে খেলোয়াড়দের জন্য আলাদা জিম এবং আইসবাথ করা হয়েছে। ৫২ বছরের ইতিহাসে ২০২৩ সালে রেকর্ড পরিমান আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করে টেনিস ফেডারেশন। গত বছর ৯টি আন্তর্জাতিক টুর্নমেন্ট অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশে। ২০২৩ সালে সর্বাধিক পেশাদার যুগে প্রবেশ করে এদেশের টেনিস। টুর্নামেন্টগুলো হচ্ছে- আইটিএফ এশিয়া অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশীপ, জে ডব্লিউ টি এস বাংলাদেশ ওপেন টেনিস, জে ডব্লিউ টি এস বিকেএসপি ওপেন টেনিস, আইটিএফ এশিয়া অনূর্ধ্ব-১৪, প্রস্তুতিমূলক টেনিস, এশিয়ান অনূর্ধ্ব-১৪ টেনিস, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর ও আইটিএফ ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর অনূর্ধ্ব-১৮। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হয়ে যাওয়া বার্ষিক সাধারণ সভায় সম্পাদকীয় প্রতিবেদন জাতির জনক ও তার পরিবারের প্রশংসা ও শোক প্রস্তাব না থাকায় আওয়ামী সমর্থকদের দ্বারা ভরা মজলিসে লাঞ্চিত হতে হয় হায়দারকে। নির্বাচিত কমিটি শত প্রতিকূলতার মধ্যে টেনিসের বাৎসরিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে যাচ্ছে। জাতীয় ক্রীড়াপরিষদ থেকে বছরে ১২ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয় টেনিসের জন্য, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। অর্থাভাবে যেনো খেলা মুখ থুবরে না পড়ে, সে ব্রত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে টেনিস। সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হায়দার ব্যক্তিগতভাবে ৬০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা টেনিসের পেছনে অনেক আগেই ব্যয় করেছেন। ফলে ম্যাজিকের মতো কাজ করে টেনিসের হাইপারফরমেন্স ট্রেনিং। ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৪ বালক ও বালিকার এশিয়ান টেনিস একক প্রতিযোগিতায় দ্বৈত মুকুট ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ। ৫২ বছরে প্রথম আইটিএফ কর্তৃক হোয়াইট লেভেল স্বীকৃতি লাভ করে দেশের টেনিস।
ভয়ানক ভুল করেছে ভারত: জাস্টিন ট্রুডো

বুধবার (১৬ অক্টোবর) ট্রুডো বলেছেন, শিখ ভিন্নমতাবলম্বীদের টার্গেট করে ভারত কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। ভারতের এমন পদক্ষেপকে ভয়ানক ভুল বলে উল্লেখ করেছেন ট্রুডো। শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতকে আরও একহাত নিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। খবর আল জাজিরার। কানাডার প্রধানমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, নিজ্জর হত্যাকাণ্ডটি ছিল ভারতের ব্যাপক অভিযানের অংশ, যেখানে ভারতীয় সরকারের প্রতিনিধিরা কানাডার অভ্যন্তরে ভিন্নমতাবলম্বীদের সুপরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তু করছে। স্থানীয় পুলিশের তদন্তের বরাত দিয়ে ট্রুডো বলেছেন, কানাডিয়ানদের প্রতি সহিংসতা… ভারত সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে তারা সরাসরি জড়িত ছিল। এদিকে কানাডার এমন অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে ভারত। এর আগে গত সোমবার ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কানাডা থেকে ভারতীয় কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই তালিকায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মাও রয়েছেন। একইসঙ্গে কানাডার ৬ জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কানাডায় ভারতীয় হাই কমিশন এবং অন্যান্য কূটনীতিকদেরকে ভিত্তিহীনভাবে নিশানা করা গ্রহণযোগ্য নয়। অভিযোগের স্বপক্ষে তেমন কোনও প্রমাণ দেখতে পারেনি কানাডা।
বিস্ফোরণ তেল চুরি করার সময়, নিহত ৯৪

নাইজেরিয়ায় জ্বালানিবাহী ট্যাংকার ট্রাক বিস্ফোরণে অন্তত ৯৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৫০ জন। পুলিশের মুখপাত্র জানান, কানো শহরে কাছাকাছি মাহিয়া এলাকায় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। এরপর তা বিস্ফোরিত হলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের অনেকে জ্বালানি চুরি করতে ছুটে আসে। এ কারণে বিস্ফোরণে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ মুখপাত্র লন অ্যাডাম বলেন, ‘বাসিন্দারা দুর্ঘটনায় পড়া ট্যাংকার থেকে তেল চুরি করতে ব্যস্ত ছিলেন। এমন সময় বিস্ফোরণ হলে সবার গায়ে আগুন লেগে যায়। ৯৪ জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এর আগে গত মাসে একটি গবাদিবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে জ্বালানি ট্যাংকারের সংঘর্ষে সৃষ্ট বিস্ফোরণে ৪৮ জন নিহত হয়েছিলেন।
৩০ দিনের সময় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি ইসরায়েলকে

গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার বাড়ানোর জন্য বা সামরিক সহায়তার ঝুঁকি কমাতে ইসরায়েলকে ৩০ দিনের সময় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি চিঠি ইসরায়েলকে পাঠানো হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদন সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিঠিটি গত রবিবার পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে উত্তর গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি আক্রমণে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক হতাহতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমান মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন। ইসরায়েল গত মাসে উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মানবিক সহায়তা প্রদানে বাধা দিয়েছে। । এ নিয়ে মার্কিন সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইসরায়েলকে সতর্ক করার জন্য চিঠিটি দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই মাসে আপনার সরকারের কাছ থেকে জরুরি এবং টেকসই পদক্ষেপ চাই। এদিকে ইসরায়েল সরকারের কাছে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের এই চিঠির বিষয়বস্তু মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টও নিশ্চিত করেছে। এই চিঠিতে সই করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। তবে চিঠিটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব। ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ নিয়ে বলেন, ‘মার্কিন কর্মকর্তাদের পাঠানো চিঠি ইসরায়েল গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। চিঠিতে যে বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, সেই বিষয়গুলোর সমাধান ইসরায়েলও চায়।’ উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার ৩৫০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
গাজায় হাজার ডলার ২৫ কেজি ময়দার দাম!

যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় এক কেজি টমেটোর দাম ১৮০ মার্কিন ডলার। প্রতি কেজি চিনির মূল্য ৬০ ডলার। উত্তর গাজায় ২৫ কেজির এক বস্তা ময়দার মূল্য ১ হাজার মার্কিন ডলার। দক্ষিণ গাজায় তা দেড়শ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। গাজার উত্তরে যুদ্ধপরিস্থিতি ভয়াবহ বলে খাদ্যের দাম অসহনীয় ও ক্রেতার ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ অব্যাহত থাকায় খাদ্যমূল্য শুধু অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়নি একই সঙ্গে ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলি বাধার কারণে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর নাজুক পর্যায়ে চলে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র ইসরায়েলকে ত্রাণ তৎপরতায় বাধা দেওয়ায় অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারী দিলেও পরিস্থিতির কোনো হেরফের হয়নি। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে গাজায় এ ভয়াবহ খাদ্য সংকটের খবর উঠে এসেছে। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে, ইসরায়েল উত্তর গাজায় প্রবেশের জন্য প্রায় সমস্ত খাদ্য সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে, জাতিসংঘের অনুমান, সেখানে বসবাসকারী প্রায় ৪ লাখ ফিলিস্তিনিরা অনাহারে ভুগছে। ইসরায়েলি হামলা এবং জোরপূর্বক বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশে খাদ্য বিতরণ পয়েন্ট, রান্নাঘর এবং বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) সহায়তা পায় উত্তর গাজার একমাত্র কার্যকরী বেকারিতে ইসরাইল গোলাবারুদ দিয়ে আঘাত করার পর আগুন ধরে যায়। গাজা উপত্যকা জুড়ে, কমপক্ষে ২.১৫ মিলিয়ন মানুষ, বা জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশ, উচ্চ স্তরের খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হয়ে পড়ায়, পাঁচজনের মধ্যে একজন অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। গাজার বেশিরভাগ লোকেরই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার উপায় নেই এবং দাতব্য রান্নাঘর এবং খাদ্য ও নগদ কুপনের জন্য সাহায্য বিতরণের উপর নির্ভর করে। ইসরায়েলের চলমান হামলার কারণে অর্থনীতি ভেঙে পড়ায় তাদের বেশিরভাগই চাকরি হারিয়েছে। বিনিময়ের জন্য তাদের কাছে যা কিছু নগদ সঞ্চয় এবং আইটেম ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। মাইলের পর মাইল ফসলের মাঠ গোলার আঘাতে পুড়ে গেছে। চাষাবাদ বন্ধ। খাদ্য উৎপাদনের কোনো সুযোগ পাচ্ছে না এলাকাবাসীরা। কারণ লাখ লাখ বাসিন্দা প্রাণের ভয়ে এক কাপড় পড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এরফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। যুদ্ধের আগে, এক ডজন ডিমের দাম ছিল সাড়ে ৩ ডলার। এটি এখন গাজার দক্ষিণে ৩২ এবং উত্তরে প্রায় ৭৩ ডলারে এ বিক্রি হয়। নন-ডেইরি গুঁড়ো দুধ এখন উত্তরে বিক্রি হয় ১ ডলার প্রতি চামচ, বা ১২৪ ডলার প্রতি কিলো (২.২ পাউন্ড)। ইসরায়েল গাজার বেশিরভাগ খামার, কূপ এবং গ্রিনহাউস ধ্বংস করার পরে শসা এবং টমেটো সহ তাজা পণ্যগুলি সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও দুস্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। ভূউপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে যুদ্ধের আগে ও পরে কৃষি জমি ধংসের চিহ্ন স্পষ্ট ধরা পড়ে। গাজার বিট লাহিয়া ছিল একসময়ের উর্বর অঞ্চল। যেখানে অজস্র রসালো স্ট্রবেরি ভর্তি ট্রাক ক্ষেত থেকে ছুটে আসত বাজারে। স্থানীয়রা পছন্দ করে স্ট্রবেরিকে ডাকত ‘লাল সোনা’ বলে।
মতিয়া চৌধুরী যে কারনে ‘অগ্নিকন্যা’র খেতাব পেয়েছিলেন

বাংলাদেশি নারী রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রভাবশালী এক নাম মতিয়া চৌধুরী। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাকে বলা হয় ‘অগ্নিকন্যা’। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে তার যে উদ্দীপ্ত ভাষণ, সেই উদ্দীপ্ত ভাষণ তাকে অগ্নিকন্যার রূপ দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। একনজরে মতিয়া চৌধুরী মতিয়া চৌধুরীর জন্ম ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী। তিনি ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৩-৬৪ সালে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে রোকেয়া হলের ভিপি এবং ১৯৬৪ সালে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্রাবস্থায় তিনি ছাত্র ইউনিয়নে সাফল্যের সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নামেই ছাত্র ইউনিয়নে একটি গ্রুপের নাম হয়েছিল ‘মতিয়া গ্রুপ’। ১৯৬৭ সালে ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত মতিয়া পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭০ ও ১৯৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা, তদবির এবং আহতদের শুশ্রুষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ন্যাপ ছেড়ে মতিয়া যোগ দেন দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে। ১৯৭১ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়কালে তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক এই জীবনে নানা দুর্বিষহ স্মৃতিও রয়েছে। দু-একবার নয়, জেলে গেছেন ১৫ বার। বছরের পর বছর কাটাতে হয়েছে জেলে। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ টানা দুই বছর জেল খাটেন। ১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১২ জানুয়ারি ২০২৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন। নিজের রাজনৈতিক দক্ষতা-যোগ্যতায় তিন দফায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে তিনি কৃষি, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর এ নিয়ে আরো দুই দফায় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে শেরপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এর আগেও তিনি দুইবার একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।