১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

কলেজে মাত্র ৪ পরীক্ষার্থী, সবাই ফেল !

ফেনীর বেগম সামছুন্নাহার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের কেউই পাস করেনি। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের লস্করহাট এলাকায় বেগম সামছুন্নাহার গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তী ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে উচ্চ মাধ্যমিকের কার্যক্রম শুরু হয়। ফলাফল বিপর্যয়ের ব্যাপারে বেগম সামছুন্নাহার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এমরানুল হক বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে এবার চারজন পরীক্ষার্থী ছিল। তাদের মধ্যে একজন অনিয়মিত। প্রতিষ্ঠানের ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ এখানে সাধারণত দুর্বল শিক্ষার্থীরা ভর্তি হন। এছাড়া দীর্ঘদিন আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে খারাপ করেছে। কলেজে চলতি শিক্ষাবর্ষে ২১ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত বলে জানান তিনি। ফেনী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফী উল্লাহ বলেন, এমন ফলাফলের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ফেনীতে ৬১.৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫৩৯ জন। শতভাগ পাস করেছে একটি প্রতিষ্ঠানে। আলিমে ৮৯.২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৬০ জন। এছাড়া আলিমে শতভাগ পাস করেছে ৮টি প্রতিষ্ঠানে।

স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে পোশাক খাত, নেই অস্থিরতা

সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে পোশাক খাত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। কোন ধরনের অস্থিরতা নেই। আজ  বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় পোশাক খাতের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হয়েছে। বার্তায় উল্লেখ করা হয়, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত সাভার-আশুলিয়া এলাকার ৪০১টি কারখানার মধ্যে ১টি ছাড়া বাকি কারখানা খোলা ছিল। নারায়ণগঞ্জে সকল কারখানা চালু রয়েছে এবং গাজীপুরে ৮৭১টি কারখানার মধ্যে একটি ছাড়া বাকি কারখানা খোলা আছে। এদিকে, ঢাকা মহানগরী এলাকার ৩০১টি কারখানার মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সকল কারখানা চালু রয়েছে।

কতদিন বাংলাদেশের অর্থনীতি চাপে থাকবে জানাল বিশ্বব্যাংক

বিশ্বব্যাংক বলছে,  চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে ৪ শতাংশ হবে। যার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও একবছর চাপে থাকবে।  তবে সংস্থাটি বলছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সেটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য অনলাইনে ওয়াশিংটন থেকে বক্তব্য রাখেন- বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ইকনোমিস্ট ধ্রুব শর্মা, ইকনোমিস্ট নাজমুস খান এবং বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই মুহূর্তে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বহিস্থ খাতের চাপ, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। এসব কারণে প্রবৃদ্ধি খুব বেশি বাড়বে না। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কেননা এখনো ৮৪ দশমিক ৯ শতাংশ কর্মসংস্থান অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এটি অত্যন্ত উচ্চ সংখ্যা। ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কর্মসংস্থান কমেছে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ হারে। আর্থিক খাত নিয়ে বলতে গিয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে নানা ধরনের সংকট রয়েছে বিশেষ করে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। সরকারের অনেক প্রচেষ্টার পরও সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া মূল্যস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদেও হার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেসরকারি খাতে ঋণ গ্রহণ কমেছে। প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে থাকবে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, মধ্যবর্তী পয়েন্ট হবে ৪ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বিশ্বব্যাংক এপ্রিলে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। চলমান অর্থবছরের বাজেটে সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। সেই হিসাবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস সরকারি লক্ষ্যের চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম হবে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী কমে গেলে তা হবে কোভিড মহামারির পর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের পূর্বাভাস কমানোর পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনও কমিয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়েছে। গত অর্থবছরের জন্য সরকারের সাময়িক প্রাক্কলন ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কর্মের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে গ্যাপ রয়েছে। সেটি একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার মিস ম্যাচ আছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে এসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতি খারাপ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেনি। অথচ প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যান তরুণ কর্মের বাজারে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে শিক্ষিত ও শহুরে বেকার বৃদ্ধি পাওয়াটা একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। নানা উদ্যোগ নিয়েও এটি কমানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। যা সাধারণ মানুষের জীবনমানকে নিচে নামাচ্ছে। পাশাপাশি বৈষম্যও বাড়ছে বাংলাদেশে। এক্ষেত্রে বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ দরকার। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং আর্থিক খাতে বিভিন্ন সংস্কার দ্রুত করতে হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল ঢাকায় এসেছে

দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল এখন ঢাকায়। তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বুধবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকা এসে পৌছায়। সকাল ৯টার আগে হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌছায় দক্ষিণ আফ্রিকা। স্পিনার কেশভ মহারাজের সঙ্গে স্কোয়াডে আছেন আরও দুই স্পিনার সেনুরান মুত্তুস্বামী এবং ড্যান পিড। তাদের পেস আক্রমণও যথেষ্ট সমৃদ্ধ। অভিজ্ঞ কাগিসো রাবাদার সঙ্গে আছেন লুঙ্গি এনগিডি, ড্যান প্যাটারসন ও অলরাউন্ডার উইয়ান মুল্ডার। এই সিরিজে প্রোটিয়া দলে নতুন মুখ ম্যাথু ব্রিটজ। তিনি প্রোটিয়াদের হয়ে ৮টি টি-টোয়েন্টি খেললেও সাদা পোশাকে খেলার সুযোগ হয়নি কখনো। আগামী ২১ অক্টোবর থেকে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। আর ২৯ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এদিকে এই সিরিজ দিয়েই বাংলাদেশে শুরু হবে নতুন কোচ ফিল সিমন্স অধ্যায়। গতকালই এক ঘোষণায় কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করেছিল বিসিবি। একইসঙ্গে চূড়ান্ত হয় ফিল সিমন্সের নিয়োগ। বাংলাদেশের জন্য তাই এই সিরিজে থাকবে বিশেষ নজর। সেইসঙ্গে মিরপুরে প্রথম টেস্টে নিজের বিদায়ী টেস্ট খেলতে নামবেন সাকিব আল হাসান। দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট স্কোয়াড- ডেভিড বেডিংহাম, ম্যাথু ব্রিটজকে, টনি ডি জর্জি, কেশভ মহারাজ, এইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), উইয়ান মুল্ডার, সেনুরান মুথুস্যামি, ড্যান পিটারসন, ড্যান পিট, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টিয়ান স্টাবস, রায়ান রিকেলটন ও কাইল ভেরেইনে, ডিওয়াল্ড ব্রেভিস ও লুঙ্গি এনগিডি।

বরখাস্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হেড কোচ হাথুরুসিংহে

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে চান্ডিকা হাথুরুসিংহের মেয়াদ ছিল আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। যদিও তার এই মেয়াদ শেষের আগেই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিদায় বলতে হলো লঙ্কান এই কোচকে। তাকে চুক্তির মেয়াদ শেষের আগেই বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাকে একটি শোকজ লেটার পাঠিয়েছে বিসিবি। সেই সঙ্গে নতুন কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সের নাম ঘোষণা করেছে বিসিবি। মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদ হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, বরখাস্ত করার আগে আমরা তাকে (চান্দিকা হাথুরুসিংহে) নিয়ম মেনে শোকজ নোটিশ করেছি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে তাকে। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স। ফলে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়েই সিমন্সের দায়িত্ব শুরু করার কথা রয়েছে। এর আগে লম্বা সময় ধরেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে এই কোচের। সেই সঙ্গে ২০২৩ বিশ্বকাপে এক ক্রিকেটারের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত ভঙ্গেরও অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে ৪৫ দিন ছুটির বিপরীতে প্রথম বছরে ৬৭ দিন এবং দ্বিতীয় বছরে ৫৯ দিন ছুটি কাটিয়েছেন এই কোচ। এ কারণেই তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। উল্লেখ্য, ফারুক আহমেদ বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেবার পর থেকেই শোনা যাচ্ছিল চাকরি হারাতে পারেন হাথুরুসিংহে। কিন্তু পাকিস্তান সফরে দারুণ পারফর্ম করায় সেবার টিকে যায় এই লঙ্কান কোচের চাকরি। কিন্তু ভারত সফরে ভরাডুবির পর বাজলো চান্দিকার বিদায় ঘন্টা। মঙ্গলবার সকালে মিরপুরে ক্রিকেটারদের অনুশীলন করানোর পর আনুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে হোম অব ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন চান্দিকা হাথুরুসিংহে।

লাপাত্তা বিপিএলের গত ১০ আসরের লাভের ১০৬ কোটি টাকা

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাস খুব বেশি পুরনো নয়। মূলত দর্শককে বিনোদন দিতে এবং ক্রিকেটকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলতে এই ফরম্যাটের উত্থান হয়। বিশ ওভারের জনপ্রিয়তা দেখে ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো টুর্নামেন্ট আয়োজনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে বাকি দেশগুলোও বিশ ওভারের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তারই ধারায় একটা টুর্নামেন্ট আয়োজন করার পরিকল্পনা করতে থাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। যে পরিকল্পনার বাস্তবায়নই আজকের বিপিএল। ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো মাঠ গড়ায় এই আসর। যেখানে ৬টি দল অংশ নেয়। সেখান থেকে আজ ১০টি বসন্ত পেরিয়ে আগামী ডিসেম্বরে বিপিএলের ১১তম আসর শুরু হতে যাচ্ছে। এবার আসা যাক বিপিএলের আয়-ব্যয়ের হালখাতার হিসেব। বিপিএলের প্রথম আসরে আয় হয়েছিল ৩৩,০৫,১৩,০০০ টাকা, যেখানে ব্যয় হয়েছিল মাত্র ২১, ৪২,২০৩ টাকা। ফলে বিপিএলের প্রথম আসর থেকে লাভ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড লাভ করেছিল ৩২,৮৩,৭০,৭৯৭ টাকা। বিপুল পরিমাণে আয়ের উৎস হিসেবে গেম অন স্পোর্টসের ভূমিকাই বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা বিপিএল শুরুর আগে বিসিবির সঙ্গে গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের ৬ বছরের চুক্তি হয়েছিল। বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে আয় হয়েছিল ৩৮,৭৬,৪০,০০০ টাকা, যেখানে খরচ হয়েছিল ৫,০৯, ৮২,৮৫১ টাকা। ফলে বিপিএলের দ্বিতীয় আসর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড লাভ করেছিল ৩৩,৬৬,৫৭,১৪৯ টাকা। ফলে বিপিএলের প্রথম দুই আসর থেকে গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট বিসিবিকে ৬৬,৫০,২৭,৯৪৬ টাকা প্রফিট দেয়। ২০১৩-১৪ সালে বিপিএল মাঠে গড়ায়নি। ফলে আয়ও করতে পারেনি বিসিবি। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে ২০১৩-১৪ সালে বিপিএল মাঠে না গড়ালেও ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৩,৫৭,৭৯,৩৯৯ টাকা। কারণ হিসেবে জানা যায়, আগের আসরে স্পট ফিক্সিং হয়েছিল। আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ও নিরাপত্তা ইউনিট আকসুর তদন্ত রিপোর্টে ধরা পরে ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স। যেখানে আকসুর নির্দেশনা অনুযায়ী বিসিবির একটি ট্রাইব্যুনাল কোর্ট করতে হয়েছিল। এই ট্রাইব্যুনালে যারা ছিলেন তাদের পেছনে বিসিবিকে বিপুল পরিমাণে টাকা খরচ হয়েছিল। শাকিল কাসেম নামে এক প্রকটন ক্রিকেটারও এই ট্রাইব্যুনালে ছিলেন। সে সবচেয়ে কম পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন, তবে সে যে পারিশ্রমিক নিয়েছিলে সেটিও চোখে ধাঁধা লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা। পারিশ্রমিক হিসেবে ৫৪ লক্ষ তাকা নিয়েছিলেন তিনি। বিসিবিকে শুধু মাত্র কোর্ট পরিচালনা করতেই এই বিপুল পরিমাণে টাকা ব্যয় করতে হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, পরবর্তী বছরেও ৭৫,২৭,৭১৫ টাকা খরচ করতে হয়েছিল এই ট্রাইব্যুনাল কোর্ট চালাতে। স্পট ফিক্সিং কা-ের কারণে দুই বছর বিরতির পর ২০১৫-১৬ সালে ফের মাঠে গড়ায় বিপিএল। এটি বিপিএলের তৃতীয় আসর ছিল যেখানে আয় হয়েছিল ৪১,৫৯,৩২,০০০ টাকা যেখানে খরচ হয়েছিল ১৫,০০, ৪৭,৭০৯ টাকা। তাতে বিপিএলের তৃতীয় আসর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড লাভ করেছিল ২৬,৫৮,৮৪,২৯১ টাকা। এছাড়াও, বিপিএলের ৪র্থ আসরে আয় হয়েছিল ৪৪,৩৪,৮১,০০০ টাকা যেখানে খরচ হয়েছিল ১৩,৩৮,৩০,৯০১ টাকা। বিপিএলের ৩য় আসর থেকেই ব্যয়ের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, ২০১৫-১৬ সাল থেকে বিপিএলের সমস্ত কিছু বিসিবি নিয়ন্ত্রণ করে। গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট যেখানে খবরচ করেছিল মাত্র ২১ লাখ টাকা সেখানে তাদের সাথে চুক্তি বিচ্ছিন্ন করেছে। বিপিএলের তৃতীয় আসর থেকেই গেম অন স্পোর্টসের সাথে সম্পর্ক চ্যুত করে বিসিবি। শুধু তাই নয় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সাথে ৬ বছরের চুক্তি থাকলেও সেই চুক্তিও শেষ হয়ে যায়। তখন থেকে বিসিবি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিপিএল পরিচালনা শুরু করে এবং তখন থেকেই ব্যয়ের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। বিপিএলের পঞ্চম আসরে আয় হয়েছিল ৪৫,৭৩,১৬,৬৭৩ টাকা যেখানে খরচ হয়েছিল ৩৭,৫৭, ৪১,২৪০ টাকা। পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই বোঝা যায় বিসিবি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিপিএল পরিচালনা করার পর থেকে ব্যয়ের পরিমাণ কীভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। এবার আসা যাক বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের হালখাতা। বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরে আয় হয়েছিল ৯৭,১৯,৬০,৩১৬ টাকা যেখানে খরচ হয়েছিল ৮৩,৩৬,৭৯,৬১২ টাকা। যা বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যয়। শুধু বিপিএল ইতিহাসেই নয়, বাংলাদেশে যতগুলো আইসিসি ইভেন্ট হয়েছিল তার থেকেও বেশি ব্যয় হয়েছিল বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরে। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কো-হোস্ট এবং ২০১৪ সালে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুরুষ ও নারীদের আয়োজক ছিল। যেখানে ১৬টি পুরুষ ও ৮টি নারী দল অংশগ্রহণ করে। উদ্ভূত ব্যাপার হলো- ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিসিবির খরচ হয়েছিল ৪১ কোটি টাকা। এর বিপিএলে ৭টি দলের পেছনে খরচ হয়েছে ৮৩,৩৬,৭৯,৬১২ টাকা। মূলত এই যায়গায় প্রশ্ন থেকে যায়, কেন এতো টাকা ব্যয় হলো? আরেকটি বিষয়ে জানা যাক, বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খরচ হয়েছিল রেকর্ড প্রায় ১৬ কোটি টাকা। উদ্বোধনী ওই অনুষ্ঠানে বলিউডের সুপারস্টার সালমান খান এবং জনপ্রিয় নায়িকা ক্যাটরিনা কাইফ পারফর্ম করেছিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে ২০১১ সালে গালা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খরচ হয়েছিল সাড়ে ১১ কোটি টাকা। যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশ। আইএমজি রেটিং অনুযায়ী বেইজিং অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরের স্থানে রয়েছে এটি। ২০২০-২১ সালে করোনার কারণে বিপিএল মাঠে গড়ায়নি। তবে বিশেষ কারণে আয় ছিল ২,৫৬,১৮,৯৩৬ টাকা এবং লজিস্টিক্যাল খরচ হিসেবে ব্যয় হয় ৩৮,০৫,৯২১ টাকা। ২০২১-২২ সালে ফের মাঠে গড়ায় বিপিএল। এটি ছিল বিপিএলের ৭ম আসর। যেখানে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৮,৫৮,৭১,৪৭৬ টাকা আর ব্যয় হয়েছিল ১৯,১২,৭২,২৫১ টাকা। বিপিএলের ৮ম আসরে আয় হয়েছিল ৫৩,০৬,৬১,০৩৪ টাকা যেখানে খরচ হয়েছিল ৩৫,৭০, ৮৮,৯২৮ টাকা। বিবিপেলের ৯ম আসরে আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৬,৪৮,০০,০০০ টাকা যেখানে খরচ হয়েছিল ৫১,৫৬,৮০,০০০ টাকা। যেখানে দেখা যায় লাভের পরিমাণ মাত্র ৫ কোটি টাকা। সময়ের গড়ানোর সাথে সাথে লাভের পরিমানও কমতে থাকে। এবার আসা যাক বিপিএল হালখাতার মোট হিসেবে। বিপিএলের ১০টি আসর মিলিয়ে বিসিবির মোট আয় ৪৯৭,৩৮,০০,৫৫২ টাকা আর ব্যয় হয়েছে ২৭৮,০৯,৯১,০২৮ টাকা। ফলে বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে বিসিবির লাভ হয়েছে ২১৯,২৮,০৯,৫২৪ টাকা। সেক্ষেত্রে বিপিএল থেকে লাভের ২১৯,২৮,০৯,৫২৪ টাকা বিসিবির ফান্ডে থাকার কথা। জানা যায়, এই ২১৯ কোটি টাকার মধ্যে বিসিবির একটি এফডিআর আছে। সেই এফডিআরে তাকার পরিমাণ আছে ৮৭ কোটি টাকা। মজার ব্যপার হচ্ছে বিসিবি সর্বোষেষ যে ব্যালেন্সের হিসেব দিয়েছে সেখানে বিপিএলের ক্লোজিং ব্যালেন্স ছিল ১১৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০৬ কোটি টাকার হিসেব মিলাতে পারছে না বিসিবি। পরিশেষে বলা যায়, আয়-ব্যয় মিলিয়ে ১০৬ কোটি টাকার হদিস নেই।

ইসরায়েলকে নিন্দার চিঠিতে সই করেনি ভারত

ইজরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে ইজরায়েল রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিওর প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ইজরায়েলের অভিযোগ, গুতেরেস ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা করেননি। ইজরায়েল রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সে দেশে প্রবেশাধিকারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। গোটা বিশ্বের ইউরোপ, আফ্রিকা-সহ ১০৪টি দেশ এ বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবকে সমর্থন জানিয়ে চিঠি প্রকাশ করলেও ভারত সেই চিঠিতে সই করল না। আজ কংগ্রেস নেতৃত্ব মোদী সরকারের এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে ভারত ওই চিঠিতে সই না করলেও লেবাননে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর উপরে হামলার নিন্দামূলক বিবৃতিতে যোগ দিয়েছে। ইজরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরে ইজরায়েল রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিওর প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ইজরায়েলের অভিযোগ, গুতেরেস ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা করেননি। ইজরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের ১০৪টি দেশ ও আফ্রিকান ইউনিয়ন চিঠি প্রকাশ করে। ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশের পাশাপাশি অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ তাতে সই করে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১০টি সদস্য দেশ এই চিঠিতে সই করলেও আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত সই করেনি। মোদী সরকারের এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের মন্তব্য, “কেন স্বয়ম্ভূ প্রধানমন্ত্রী বিদেশ মন্ত্রককে এই অবস্থান নিতে নির্দেশ দিয়েছেন, তার পিছনে রহস্য রয়েছে? লজ্জাজনক।” কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের মন্তব্য, “কেন ভারত এই চিঠিতে সই করল না, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইজরায়েল চরম ভুল করেছে। ভারতের উচিত ছিল সবার আগে সই করা।” চিঠিতে সই না করলেও লেবাননে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর উপরে ইজরায়েলের হামলার নিন্দামূলক বিবৃতিকে সমর্থন জানিয়েছে ভারত। লেবাননে হিজবুল্লার বিরুদ্ধে ইজরায়েলের অভিযানে শান্তিরক্ষা বাহিনীর ৫ জন আহত হওয়ার পরে যে সব দেশ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে নিজের সেনা পাঠায়, সেই দেশগুলি এর নিন্দা করে বিবৃতি জারি করেছে। ভারত তাতে সমর্থন জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা এই সময়ে খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ। আমরা তাই শান্তিরক্ষা বাহিনীর উপরে হামলার নিন্দা করছি।’

ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল মাত্র ৪ মিনিটে আঘাত হানতে সক্ষম ইসরায়েলে

ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম। গেল এপ্রিলে ইরানের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-১’ এ ব্যবহৃত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পুরোপুরিভাবে প্রতিরোধে ব্যর্থ হয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম। এবার ইরানের তৈরি কদর এবং এমাদ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে আবারও আয়রন ডোমের অকার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। ইরানের সংবাদপত্র লিখেছে, ইসরায়েলের মিত্রদের যোদ্ধারা ইহুদিবাদীদের সমর্থনে ইরানের উৎক্ষেপিত শত শত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন প্রতিরোধে পাল্টা মিসাইল নিক্ষেপ করে। তবে অপারেশন ট্রু প্রমিজ ২-এ ব্যবহৃত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সেইসাথে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ও তাদের সমর্থকদের প্রতিরক্ষা প্রচেষ্টা খুবই অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ইরান অধিকৃত ফিলিস্তিনে আক্রমণের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে দেশীয় তৈরি প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) দাবি করেছে, তাদের নিক্ষেপ করা ৯০ শতাংশ মিসাইল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহর নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ এবং আইআরজিসি কমান্ডার আব্বাস নীলফোরোশানকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযান চালানো হয়। ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানান, ইসরায়েলের উপর ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার লক্ষ্য ছিল একটি গোয়েন্দা সদর দপ্তর এবং তেল আবিব সরকারের ৩টি সামরিক ঘাঁটি।

মিয়ানমার সঙ্কট বিপর্যয়ে যাওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে মানবাধিকারের অবনতি হওয়ায় মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কাছে অস্ত্রের সরবরাহ সীমিত করতে এবং যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দেশটির জেনারেলদের বিচার করার জন্য অস্ট্রেলিয়াকে আরও কিছু করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির নাগরিকরা। মিয়ানমারের বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টার টম অ্যান্ড্রুজের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার পরিবারগুলো বৃহত্তর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।  বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে পতন ঘটায় এবং বছরের পর বছর ধরে পদ্ধতিগত দমন-পীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সূচনা করে। জান্তা ৫৬০০ টিরও বেশি বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে, ২০,০০০ রাজনৈতিক বন্দিকে কারাগারে ঠেলে দিয়েছে এবং ৩.১ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টার টম অ্যান্ড্রুজের একজন বোন আছে এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু পরিবার মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যে চীনা দূতাবাসের সামনে এক বিক্ষোভে অংশ নেয়। গত শুক্রবার ক্যানবেরায় চীনের দূতাবাসের বাইরে এক বিক্ষোভে মিঃ অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘মিয়ানমারে শান্তি নেই, আমরা চাই তারা অস্ট্রেলিয়ার মতো শান্তিতে ঘুমোক।’ প্যাট্রিক চো, যার ভাই এবং বোন ইয়াঙ্গুনে থাকেন, তিনি বলেন, প্রতিদিন তার পরিবার নিয়ে চিন্তিত থাকতে হয়। আমি বিশ্বাস করি অস্ট্রেলিয়া সবসময় মিয়ানমারের ব্যাপারে একটি মুখ্য ভূমিকা পালনের কথা বলে কিš‘ … আমি মোটেও সন্তষ্ট নই। মিঃ অ্যান্ড্রুস ক্যানবেরার কাছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক শক্তি ব্যবহার করার জন্য একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক উদ্যোগে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘খারাপ থেকে খারাপ আরো ‘ভয়ঙ্কর’ হয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারে আরও বড় বিপর্যয় এড়াতে একটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গৃহীত পদক্ষেপে সংশোধন অপরিহার্য। তিনি চান অস্ট্রেলিয়া যুদ্ধাপরাধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সর্বজনীন এখতিয়ার ব্যবহার করে মিয়ানমারের প্রধান সামরিক ব্যক্তিত্বদের বিচার শুরু করুক এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এই ধরনের অপরাধ উত্থাপন করুক। তবে মিঃ অ্যান্ড্রুজ স্বীকার করেছেন যে মিয়ানমারে ঘটমান পরিসংখ্যানগুলি দেশটির সামরিক নেতাদের অস্ট্রেলিয়ায় জেলের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে এটি জবাবদিহিতার পথে তাদের আনতে সাহায্য করবে এবং মিয়ানমারের জনগণের দুর্দশার উপর আলোকপাত করবে। তিনি অস্ট্রেলিয়াকে তার নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা প্রসারিত করার আহ্বান জানান। শিক্ষাবিদ এবং মিয়ানমারের প্রাক্তন রাজনৈতিক বন্দী শন টার্নেল এএপিকে বলেছেন যে জান্তা শাসনের প্রধান ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। তিনি বলেন, সামরিক জেনারেলদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞাগুলি ‘জামানতের ক্ষতি এড়ায় এবং মিয়ানমারে প্রকৃত ব্যবসাকে বাধা দেয় না। বরং এটি তাদের ব্যক্তিগতভাবে দুর্বল করে তোলে। অতীতে, সেই ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞাগুলিই কাজ করেছে।’ মিঃ অ্যান্ড্রুজ অস্ট্রেলিয়াকে ‘জান্তা’ নির্বাচন আয়োজনের নিন্দা করে বলেন, অস্ট্রেলিয়া উদ্বিগ্ন যে মিয়ানমারে বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হবে না এবং ‘কেবল সহিংসতা ও সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করবে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে মিয়ানমারের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে প্রাণহানি এবং মানবাধিকারের প্রতি অসম্মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি মিঃ অ্যান্ড্রুজের সাথে দেখা করার সময় মিয়ানমারে মানবিক সংকটের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বড় সাহায্য দাতা, ২০১৭ সাল থেকে দেশটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তহবিল সহ মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে ৮৬০ মিলিয়নেরও বেশি দিয়েছে।

নিজে বিমান চালিয়ে ইরানের স্পিকার লেবাননে গেলেন

পার্সটুডে- বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ইহুদিবাদী ইসরাইলের তীব্র আগ্রাসনের মধ্যেও ইরানের সংসদ মসলিশে শুরায়ে ইসলামির স্পিকারের লেবানন সফরকে একটি সাহসী ও নজিরবিহীন কাজ বলে অভিহিত করেছে। ইরানের সংসদ স্পিকার “মোহাম্মদ বাকের কলিবফ”-এর এ ধরনের সাহসী পদক্ষেপ, নিজে বিমান চালিয়ে লেবাননে যাওয়া এবং সেদেশে ইসরাইলের বর্বর হামলার মধ্যে বৈরুতে অবতরণ করা বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কেননা তেলআবিবের হুমকি উপেক্ষা করে তিনি ব্যাপক সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে বৈরুত গেছেন। পার্সটুডে-এর মতে, গণমাধ্যমগুলো ছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী অনেক আরবিভাষী মোহাম্মদ বাকের কলিবফের এ সহসী সফর এবং লেবাননের প্রতি ইরানের সমর্থনের প্রশংসা করেছেন। ইসরাইলের সহযোগী হিসাবে পরিচিতি সৌদিআরবের আল আরাবিয়া নিউজ চ্যানেল ইরানের সংসদ স্পিকারের এই ভ্রমণের একটি ভিডিও প্রকাশ করে লিখেছে: এটা খুবই বিস্ময়ের ব্যাপার যে, স্পিকার কলিবফ নিজে বিমান চালিয়ে লেবানন সফরে গেছেন। লেবাননে পৌঁছে তিনি বৈরুতের প্রাণকেন্দ্রে ইসরাইলি আগ্রাসনের স্থান পরিদর্শন করেন। সিএনএন আরাবিও এই খবরটি প্রকাশ করে লিখেছে: ‘ইরানের সংসদ স্পিকার ইরানের সর্বোচ্চ নেতার একটি বার্তা নিয়ে বৈরুতে পৌঁছেছেন। কলিবফ নিজে  বিমান চালিয়ে লেবাননের বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন’। একইসাথে আল জাজিরার ওয়েবসাইটেও মোহাম্মদ বাকের কলিবফের নিজ হাতে বিমান চালানোর ভিডিও প্রকাশ করেছে। এ সংক্রান্ত খবরে আল জাজিরার শিরোণাম ছিল “ইরানী পার্লামেন্ট স্পিকার নিজে বিমান চালিয়ে বৈরুতে প্রবেশ করেন”। মন্টে কার্লো নিউজ সাইটের আরবি বিভাগও এ সংক্রান্ত রিপোর্ট করে বলেছে: ইরানি পার্লামেন্ট স্পিকার ব্যক্তিগতভাবে লেবাননে তার ভ্রমণের সময় বিমানটি চালিয়েছিলেন এবং বৈরুতে ইসরাইলের সবচেয়ে মারাত্মক হামলার স্থান পরিদর্শন করেন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক জুড়ে কলিবফের এই বিমান চালানোর ভিডিওটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং ভাইরাল হয়েছে। আল-আরাবি টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইট আরও রিপোর্ট করেছে: ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার লেবানন সফরের সময় ব্যক্তিগতভাবে তার বিমান চালনা করেছিলেন। তিনি ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে লেবাননের প্রতিরোধের প্রতি ইরানের সমর্থনের বার্তা বহন করে নিয়ে যান। আল-কুদস-আল-আরাবি ওয়েবসাইট এ সম্পর্কে জানিয়েছে: আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, লেবানন সফরের সময় ইরানি সংসদের স্পিকারের বিমান চালনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এদিকে, বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ইসরাইলি হামলার কারণে সৃষ্ট ধোঁয়া বৈরুত বিমানবন্দরে কালিবফের বিমান অবতরণের সময় দেখা যায়। এদিকে, গুরুত্বপূর্ণ আরবি মিডিয়াগুলো ছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স চ্যানেলের আরবিভাষী ব্যবহারকারীরাও ইরানের সংসদ স্পিকারের এই সাহসী পদক্ষেপের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একজন ইরাকি বিশেষজ্ঞ “আব্বাস আল-আরদাউই” এই বিষয়ে বলেছেন, আরবরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল, তখন কলিবফ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও ইরানি জাতির বার্তা বহনকারী বিমানটি বৈরুতে উড়িয়ে  নিয়ে গিয়েছিলেন। আরাবিয়া ফেলিক্সের সাইটে লেখা হয়েছে: বৈরুত বিমানবন্দরে অবতরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি ছিল কলিবফ বিমানটি অবতরণ করার সময় বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা গিয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এক্স ব্যবহারকারী সালিম নামে এক ব্যক্তি তার পোস্টে লিখেছেন: কলিবফ বৈরুত বিমানবন্দরে ইরানী বিমানের বিরুদ্ধে তেল আবিবের হুমকিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ব্যক্তিগতভাবে এই বিমানটিকে চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।