১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

ইসরায়েলের পতন সময়ের ব্যাপার: দৈনিক হারেৎজ

কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, জায়োনিজম এখন বর্বরতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। গত বুধবার ইসরায়েলের দখল করা পূর্ব জেরুজালেমে ফ্ল্যাগ মার্চ করে কট্টর ইহুদি জাতীয়তাবাদীরা। সেদিন তারা যে বর্বরতা দেখিয়েছে, তার ফটোগ্রাফিক প্রমাণাদির দিকে তাকানোও অসম্ভব। এর মধ্য দিয়ে মূলত ইহুদি জাতীয়তাবাদ তথা জায়োনিজমের সর্বশেষ ধাপ ‘ব্রুটালাইজেশন’ বা বর্বরকরণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রখ্যাত ইহুদি দার্শনিক অধ্যাপক ড. ইয়েশায়াহু লেবোউইৎস কট্টর ইহুদি জাতীয়তাবাদের পরিণতি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘ছয় দিনের যুদ্ধের পরে যে জাতীয় গৌরব, উচ্ছ্বাস এবং গর্ব, তা অস্থায়ী। এখনকার উদীয়মান জাতীয়তাবাদ চরম এবং সেটা মেসিয়ানিক বা ত্রাতা মনোভাবসম্পন্ন অতিজাতীয়তাবাদের দিকে নিয়ে যাবে। তৃতীয় পর্যায় হবে বর্বরতা এবং চূড়ান্ত পর্যায় হবে ইহুদিবাদের অবসান।’ ফ্ল্যাগ মার্চের দিনে কট্টর ইহুদিবাদীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন হারেৎজের সাংবাদিক নির হাসন। তাকে একদল কিশোর আক্রমণ করেছিল। তারা তাকে মাটিতে ফেলে নির্মমভাবে লাথি মেরে মেরে আহত করেছে। তিনি বলেছেন, বুধবারের মিছিলের ‘সাধারণ মনোভাব ছিল প্রতিশোধের।’ নির হাসন লিখেছেন, সেদিন যারা মিছিলে গিয়েছিল তাদের অধিকাংশই ইসরায়েলি কট্টরপন্থী কাহানিস্ট মতবাদের রাজনৈতিক প্রতীক ‘মুষ্টি’ আঁকা টি-শার্ট পরিধান করেছিল। এ সময় তারা ‘আরবদের প্রতি মৃত্যু বর্ষিত হোক’, ‘তাদের গ্রামগুলো পুড়ে যাক’ ইত্যাদি আরববিদ্বেষী স্লোগান-গান গাইছিল। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কট্টরপন্থীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ইতামার বেন গভির। সেদিন কেবল নির হাসন একাই আক্রমণের শিকার হননি। মিছিলে অংশ নেওয়া দাঙ্গাকারীরা ফিলিস্তিনি পথচারীদের হুমকি দিয়েছে, অভিশাপ দিয়েছে, ধাক্কা দিয়েছে এবং আক্রমণ করেছে। যারা সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়েছে বা যারা ছবি তোলার চেষ্টা করে, তাদেরও আক্রমণ করেছে। মিছিল উপলক্ষে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে বাড়ি থেকেই বের হতে দেওয়া হয়নি, একপ্রকার বন্দী করে রাখা হয়েছিল তাদের। ফিলিস্তিনিরা এরই মধ্যে বুঝে গেছে যে, ইহুদিরা যখন জেরুজালেম দিবস উদ্যাপন করে তখন এলাকা খালি করাই ভালো, যাতে উদ্যাপনকারীরা তাদের ওপর নির্যাতন চালাতে প্রলুব্ধ হওয়ার কোনো কারণ খুঁজে না পায়। আমরা এখন আর কেবল মুষ্টিমেয় কিছু উগ্র বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি বা কাহানিস্ট গোষ্ঠীর মতো নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর কথা বলছি না। বর্বরতা এখন আর প্রান্তিক ইহুদি সেটেলমেন্ট বা সেটেলমেন্টের নিরাপত্তাচৌকিতে সীমাবদ্ধ নেই। এটি সব দিকে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়ংকরভাবে। এমনকি এই বর্বরতা সামরিক বাহিনী, পার্লামেন্ট নেসেট এবং মন্ত্রিসভায়ও প্রবেশ করেছে।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৬ দেশের আহ্বান হামাসের প্রতি

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ও ইসরায়েলকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপীয় ও লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশের নেতারা। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) এই যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। এ খবর জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নষ্ট করার মতো কোনও সময় নেই। হামাসকে এই চুক্তি মেনে নিতে আহ্বান জানাচ্ছি। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, বুলগেরিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, থাইল্যান্ড, পর্তুগাল, সার্বিয়া ও রোমানিয়া। এই বিবৃতিতে ইসরায়েলকে নমনীয়তা প্রদর্শনেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ইসরায়েল এবং হামাসের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই এই চুক্তিটি সম্পাদনের জন্য সর্বোচ্চ ছাড় দিতে। এখন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় এবং এই চুক্তিটি প্রয়োজনীয় প্রথম পদক্ষেপ। গত সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছেন জো বাইডেন। এতে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার এবং হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেবে। এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে মধ্যস্থতাকারীরা এই সময়ের মধ্যে আলোচনা করবেন। বাইডেন এই পরিকল্পনাকে ইসরায়েলি প্রস্তাব হিসেবে তুলে ধরেছেন। যদিও এর সমালোচনা করেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ডানপন্থি মিত্ররা। পরিকল্পনাটি পর্যালোচনার জন্য হামাসের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা। আরব দেশগুলোর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এ সময় আরও ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় সশস্ত্র যোদ্ধারা। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, আট মাস ব্যাপী এই হামলায় ইসরায়েলের হাতে ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। হামলায় ধংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা।

বাজেটে লুটেরাদের সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করছে: নুরুল হক নুর

গণবিক্ষোভে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, এই যে বাজেট দিয়েছে সেখানে বৈধ আয়ে কর দিতে হবে ৩০% আর লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ আয়ে দিতে হবে ১৫%। এই বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য নয়, এ বাজেট আজিজ, বেনজীর, সালমান এফ রহমান, এস আলমের মত লুটেরাদের জন্য। শুক্রবার (৭ জুন) বিকালে আজিজ-বেনজীরসহ দুর্নীতিবাজ-লুটেরা-মাফিয়া এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আয়োজিত গণবিক্ষোভে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণবিক্ষোভের আয়োজন করে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর। বক্তব্য শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, বিএনপির দলীয় কার্যালয়, নাইটিংগেল মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয়। নুরুল হক নুর বলেন, সংবিধানের ২০ নং অনুচ্ছেদে আছে অনুপার্জিত আয় কোন ব্যক্তি ভোগ করতে পারবে না। তাহলে এক কথায় এই বাজেট ঘুষ, দুর্নীতিকে উৎসাহিত করার সংবিধান বিরোধী বাজেট। ৫২, ৬৯, ৭১ এমনকি দেশ স্বাধীনের পর ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ইতিহাসের সমস্ত আন্দোলন-সংগ্রাম তরুণদের কারণে জয়ী হয়েছে। আজকের এই দুর্নীতিবাজ, লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবকদের জেগে উঠতে হবে। ছাত্র-যুবক-তরুণরা জেগে না উঠলে এই ফ্যাসিস্ট শাসনের পরিবর্তন হবে না। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, দুর্নীতি রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে নির্বাচন, ভোট, গণতন্ত্র না থাকায় জবাবদিহিতাহীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর সরকারের জবাবদিহিতা না থাকায় দুর্নীতি এখন স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বলতে গেলে দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। তিনি বলেন, হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশ বের করতেও ঘুষ দিতে হয়। সরকারি এমন কোন দপ্তর, অফিস নেই যেখানে ঘুষ, দুর্নীতি নাই। সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে আজিজ-বেনজীরদের তৈরি করেছে। এখন তাদের দায় নিতে চাচ্ছে না। ওবায়দুল কাদের বলেছেন আজিজ- বেনজীররা তাদের লোক না। অথচ আজিজ-বেনজীরদের তারাই প্রমোশন দিতে দিতে সেনাপ্রধান, পুলিশ প্রধান বানিয়েছে। দলের  সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, এই সরকার বেনজীর-আজিজ বান্ধব  বাজেট ঘোষণা করেছে। ১৫% কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার এবং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার সুযোগ দিয়েছে এই বাজেটে। এই বাজেট ঋণ নির্ভর। বিদুৎ, জ্বালানি খাতে ভর্তুকির বদলে উল্টো দাম বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কোন উদ্যোগ নেই। এই বাজেট মরার উপর খাঁড়ার ঘা। আমরা এই আজিজ-বেনজীর বান্ধব বাজের প্রত্যাখ্যান করছি। গণবিক্ষোভে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর হিরন, সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তরে সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, ফাতিমা তাসনিম, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন প্রমুখ।

জঙ্গি দমন ও দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পুলিশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনসহ যে কোন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি শুক্রবার ‘জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি অ্যাডিশনাল আইজিপি (পিবিআই) বনজ কুমার মজুমদারের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ও বাংলাদেশ পুলিশ ক্রীড়া পরিষদের সভাপতি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি অ্যাডিশনাল আইজিপি (পিবিআই) বনজ কুমার মজুমদার। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, আপনারা জনগণের পুলিশ হবেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আজ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। পুলিশ যেমন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও মানবতার সেবা করে তেমনি দেশের মানুষকে আজ একটি স্পোর্টসের মাধ্যমে একত্রিত করে সেটিও পুলিশ দেখিয়ে দিল, পুলিশ সব কিছুই পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বুঝে গিয়েছিলাম পাকিস্তানের সাথে আর নয়। ‘৬৬ তে যখন ছয় দফা ঘোষণা করা হলো তখনই ছিল আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। সারাদেশের মানুষ এটিকে স্বাধীনতার দলিল হিসেবে গ্রহণ করেছিল। এই ছয় দফাকে ঘিরে আজকের এই আয়োজনের জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’ তিনি আরো বলেন, জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস দমন ও চরমপন্থীদের আত্মসমর্পণ করা ছাড়াও করোনা মহামারিসহ যে কোন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আপনারা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আইজিপি বলেন, ‘জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪’ বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের অত্যন্ত সাহসী একটি পদক্ষেপ। বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান জয় বাংলাকে ধারণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ এবং ৭ জুনের ছয় দফাকে প্রতিপাদ্য করে জয় বাংলা ম্যারাথন নামকরণ অত্যন্ত অর্থবহ হয়েছে। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় হাতিরঝিলের মেরুল বাড্ডা পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে এম্ফিথিয়েটারে এসে শেষ হয় এই হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা। পরে হাতিরঝিলের এম্ফিথিয়েটারে ৪টি কাটাগরিতে ৩০ জন বিজয়ীর মাঝে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ পুরস্কার তুলে দেন। উল্লেখ্য, গত ১৪ মে ‘জয় বাংলা ম্যারাথন ২০২৪’ এর কার্যক্রমের রেজিস্ট্রেশন উদ্বোধন হয়। এতে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। মোট  ৩ হাজার ৫০০ জন রেজিস্ট্রেশন করে। যাদের মধ্যে থেকে শুক্রবার ৩ হাজার ২০০ জনের অংশগ্রহণে ‘জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪’এর হাফ ম্যারাথন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ

ঐতিহাসিক ৭ জুন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নানা মহল থেকে আসা বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা প্রশ্ন আসছে, কালো টাকা নিয়ে। কালো টাকা নিয়ে আমি শুনি, অনেকে বলে কালো টাকা? তাহলে আর কেউ ট্যাক্স দেবে না। তিনি বলেন, ঘটনা কিন্তু এটা না, এটা শুধু কালো টাকা না। জিনিসের দাম বেড়েছে। এখন এক কাঠা জমি যার, সেই কোটিপতি। কিন্তু সরকারি যে হিসেব, সেই হিসেবে কেউ বেচে না, বেশি দামে বেচে বা কিছু টাকা উদ্বৃত্ত হয়। এই টাকাটা তারা গুঁজে রাখে। গুঁজে যাতে না রাখে, সামান্য একটা কিছু দিয়ে যাতে সেই টাকাটা আসল পথে আসুক, জায়গা মত আসুক। তার পরে তো ট্যাক্স দিতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলি, আধার ছাড়া তো মাছ আসবে না। সেই রকম একটা ব্যবস্থা, এটা আসলে আগেও হয়েছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক আমলেই শুরু করেছিলো, আর পরেও প্রত্যেক সরকারই করে। তিনি বলেন, সেই সুযোগটা আমরাও দিয়েছি। অল্প ট্যাক্স দিয়ে সেই টাকাটা তোমরা ব্যাংকে নিয়ে আসো, সেই ব্যবস্থাটাই হয়েছে। এটা নিয়ে নানা জনের নানা কথা। কিন্তু তারপরেও যেগুলো মানুষের প্রয়োজন সেই ক্ষেত্রে ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছি। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করে সরকারপ্রধান বলেন, বিশেষ করে খাদ্যমূল্য; সেখানে উৎপাদন এবং সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে। বৃষ্টির কারণে যেমন আলুর বীজ নষ্ট হয়ে গেছে, তো এই রকম অনেক কিছু আছে। আমরা এখনও উৎপাদনমুখী হলে খাদ্যে কোনো দিন অভাব হবে না। মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে প্রান্তিক মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার কথাও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষ যারা, এই সীমিত আয়ের মানুষ যারা, তাদের জন্য আমরা পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। যারা একেবারে হতদরিদ্র তাদের তো একেবারে বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি। আর সামাজিক নিরাপত্তাও বিনা পয়সায় দিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা বেড়েছে, খাদ্য গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। এখন আর দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে হয় না। কমপক্ষে দুই বেলা খাবার তো পাচ্ছে মানুষ। সেখানে গ্রহণটাও বেড়েছে চাহিদাটাও বেড়েছে, আমরা সাথে সাথে উৎপাদনও বাড়িয়েছি। মূল্যস্ফীতির কারণ হিসেবে করোনাভাইরাস মহামারী ও ইউক্রেন যুদ্ধকেও দায়ী করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কোভিড অতিমারীর ফলে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে, আমরাও সেই মন্দায় পড়ে গেলাম। সারা বিশ্বে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেলো। এরপর আসলো ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, এরপর স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশন। স্যাংশনের ফলে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে পরিকল্পনা নিয়ে চলতে হবে। আমাদের দেশে যা হচ্ছে, একটা গোষ্ঠীর কিছু ভালো লাগে না। তাদের ভালো না লাগাই থাক, কান দেওয়ার দরকার নাই। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসার কারণে যে চাপ ও সমালোচনা, সেটি নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের মানুষকে খাওয়াতে হবে আগে। আমাদের রিজার্ভ কত আছে না আছে, সেটার চেয়ে বেশি দরকার আমার দেশের মানুষের চাহিদাটা পূরণ করা। সে দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পানির মত টাকা খরচ করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, এখন সীমিতভাবে খুব সংরক্ষিতভাবেই আমরা এগোতে চাই। আমাদের দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, মানুষের যে চাহিদাটা সেটা যেন পূরণ করতে পারি, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বাজেট করেছি। এবারের বাজেটে মৌলিক চাহিদাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির আমলে সর্বশেষ বাজেট মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকার ছিলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিলো ৬৮ হাজার কোটি টাকার, সেখানে আমরা ৭ লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করেছি। ছয়দফা দিবস ঐতিহাসিক ৭ জুন উপলক্ষ্যে তেজগাঁওস্থ  আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষকে বঞ্চনা থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তাই ১৯৬৬ সালে বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা প্রণয়ন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬ দফার সমর্থনে বঙ্গবন্ধু জেলায় জেলায় মিটিং করেছেন। যে জেলাতেই গেছেন, সেখানেই মামলা হয়েছে; তাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। আবার মুক্তি পেয়েছেন। এভাবে একে একে ৮ জেলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নবম বার গ্রেপ্তার হন ৮ মে, ৬ দফাকেন্দ্রিক শেষ জনসভার পর। পরদিন তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। সেবার আর তাৎক্ষণিক মুক্তি পাননি। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হলো। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬ মাস পর মামলা শুরুর আগে পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি, তিনি কোথায় কী অবস্থায় আছেন। এভাবে নিজের জীবন বিপন্ন করে বারবার তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন দেশের জনগণের জন্য। শেখ হাসিনা আরো বলেন, ১৯৬৬ সালের ৭ জুন আহুত হরতাল সফল করার জন্য সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন আমার মা। তিনি ছিলেন গেরিলা। তিনি সবার চোখ এড়িয়ে ছাত্র ও শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কর্মসূচি সফল করার পরামর্শ দিতেন। ৭ জুনের হরতালের দিন মনু মিয়াসহ ১১ জন শহীদ হলেন। বাঙালির সব অর্জনই বুকের রক্তে অর্জিত হয়েছে।